অহংকার

নিজেকে অন্যের চাইতে শেষ্ঠ ও মর্যাদাবান এবং অন্যকে ছোট ও তুচ্ছ মনে করার নাম তাকাব্বুর (অহংকার)

হযরত হাছান ইবনে আলী (রাঃ) একবার এক দল দারীদ্রের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা মাটিতে চাদর বিছিয়ে তথায় রুটী রেখে আহার করতেছিল। হযরত হাছান (রাঃ) কে দেখে সবাই খানায় শরীক হতে দাওয়াত দিল। 
তিনি বাহন থেকে নেমে এই বলে আহারে অংশ নিলেন যে আমি অহংকার কারীদের পছন্দ করিনা।
আহার শেষে সকলকে নিজের সাথে নিয়ে গেলেন এবং ঘরে যা কিছু ছিল তা সকলকে আহার করিয়ে দিলেন।

তিন ব্যক্তি আজাবের উপযোগী

হযরত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেনঃ তিন ধরনের লোকের সাথে আল্লাহ তা’আলা কিয়ামত দিবসে না কথা বলবেন, না তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন বরং তাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক আজাবে নিপতিত করবেন।

১। বৃদ্ধ যিনাকার (বার্ধক্যকালের যিনা করা): এটার অর্থ এই নয় যে; যৌবন কালে যিনা করা নিন্দনীয় নয়; বরং যিনা যৌবন কালেও জঘন্য অপরাধ, তবে বার্ধক্যকালে যেহেতু যৌনশক্তি নিবৃত প্রায় এবং মৃত্যু নিকটতম, তাই তখন এহেন ন্যাক্কার জনক কাজ নিতান্তই জঘন্যতম বলে বিবেচিত হয়।
২। মিথ্যাবাদী বাদশাহ (শাসক): মিথ্যা সকলের জন্যেই নিন্দনীয় ও জঘন্য দোষনীয় কিন্তু বাদশাহ, যার কারো ভয় নেই এবং কারো তোয়াক্কা করার প্রয়োজন নেই, এমতাবস্থায় মিথ্যা বলা অন্যান্যদের তুলনায় অধিক মারাত্নক গুনাহ ও অপরাধ।
৩। অহংকারী দরিদ্র : অহংকার ছোট-বড়, আমীর-গরীব সবার জন্যেই মন্দ ও নিন্দনীয়। কিন্তু দরিদ্র মানুষের অহংকার করা নিতান্তই আশ্চর্যজনক। কেননা তার মধ্যে অহংকারের কোন বন্তু না থাকার পরেও অহংকার করে বসে।
জান্নাত ও জাহান্নামের সর্ব প্রথম গমনকারী তিন ব্যক্তি
আল্লাহ্’র রাসূল (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেনঃ জান্নাত ও জাহান্নামে সর্ব প্রথম প্রবেশকারী তিন ব্যক্তিকে আমার সামনে পেশ করা হয়েছে।
তন্মধ্যে জান্নাতে প্রবেশকারীগণ হলেন –

১। শহীদঃ (যিনি আল্লাহ্’র জন্যে নিষ্ঠার সাথে জীবন কুরবানী দিয়েছেন।)
২। ক্রীতদাসঃ (যিনি কৃত্রিম মালিকের দাসত্বে নিয়োজিত থাকা সত্বেও আসল মালিক আল্লাহ্’র আনুগত্য থেকে বিরত হয়নি, বরং কৃত্রিম মনিবের রয়েছে।)
৩। অধিক সন্তানের অধিকারী দুর্বল ও দরিদ্র পিতাঃ (যিনি দৈহিক ও পার্থিব ক্ষেত্রে দুর্বল, আর্থিক ক্ষেত্রে দৈন্য এবং সন্তান অধিক হওয়া সত্বেও ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ।)
আর সর্ব প্রথম যারা জাহান্নামের প্রবেশ করবে। তারা হল –
১। সেই শাসক, যে অধিনস্থ প্রজাদের উপর অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগ করে (সদা-সর্বদা জুলুম-শোষনের বাজার গরম করে রাখে।)
২। সেই ধনাঢ্য ব্যক্তি, যে জাকাত আদায় করে না, (সুতরাং যে জাকাত দেয় না, তার থেকে তো অন্যান্য দান-খয়রাতের আশা করা বেহুদা ও বৃথা কথা ছাড়া কিছু নয়।)
৩। অহংকারী ফকীর: (দৈন্যতা, দারীদ্রতা থাকা সত্বেও অহংকার করা নিতান্তই অভদ্রতা ও নীচুতার লক্ষণ।)
আল্লাহ তা’আলা তিন শ্রেণীর মানুষের প্রতি খুব বেশী ঘৃণা পোষণ করেন:-
১। আল্লাহ্ তা’আলা ফাসেক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন এবং বৃদ্ধ ফাসেককে চরম ভাবে ঘৃণা করেন,
২। আল্লাহ তা’আলা কৃপণকে ঘৃণা করেন এবং মালদার কৃপণকে অধিক বেশী ঘৃণা করেন,
৩। আল্লাহ্ রাব্বুল ইজ্জত অহংকারীকে অপছন্দ করেন কিন্তু অহংকারী ফকীরকে খুব বেশী অপছন্দ করেন।
আল্লাহ্ তা’আলা তিন বান্দাহকে খুব বেশী ভালবাসেন
১। আল্লাহ্ তা’আলা মুত্তাকী ব্যক্তিকে ভাল বাসেন কিন্তু জোয়ান মুত্তাকী মানুষকে খুব বেশী ভালবাসেন।
২। আল্লাহ্ তা’আলা দানশীল ব্যক্তিকে পছন্দ করেন আর ফকীর দানশীল ব্যক্তিকে আরো অনেক বেশী পছন্দ করেন।
৩। আল্লাহ্ তা’আলা বিনয়ী ব্যক্তিকে মুহাব্বত করেন, আর সম্পদশালী বিনয়ীকে খুব বেশী ভালবাসেন।
অহংকারের হাক্বীক্বত
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এরশাদ করেছেনঃ যার অন্তরে সরিষার দানা সমান্নও অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে যাবে না। জনৈক ব্যক্তি আরজ করলেন যে, আমার ভয়লাগে  যে, আমার পোষাক, আমার জুতা ইত্যাদি উত্তম ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হোক, এটাও কি অহংকার হবে?

এরশাদ করলেন, না! (বরং) আল্লাহ্ সুন্দর সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন, তিনি তাঁর বান্দহদের মধ্যে তাঁর নেয়ামতের বিকাশ দেখতে চান! টাকা-পয়সা থাকা সত্তেও গরীবদের মত চলা আল্লাহর পছন্দনীয় নয়। আর অহংকার হলো মানুষ অন্যকে ছোট ও তুচ্ছ মনে করা । তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- আরো ফরমায়েছেন, যে ব্যক্তি নিজের জুতা নিজেয় মেরামত করে, কাপড়ে পট্টি লাগায়, আর আল্লাহ এক সেজদা করে, সে অহংকার মুক্ত হয়।
সর্বাধিক অপছন্দনীয় ব্যক্তি
একবার হযরত মূছা (আঃ) আল্লাহ্ তা’আলার কাছে জানতে চাইলেন যে, হে আল্লাহু রাব্বুল ইজ্জত! মাখলুকের মধ্যে আপনার নিকট সবচে বেশী ঘৃণীত ও অপছন্দনীয় ব্যক্তি কে?
এরশাদ করলেন: যার অন্তর অহংকারী, ভাষা কর্কশ, বিশ্বাস দুর্বল এবং হাত বখীল (কৃপন) হয়।
উত্তম উক্তি:
কোন বিজ্ঞ হাকীম বলেন যে, ধৈর্য্যের ফল শান্তি, বিনয়ের ফর ভালবাসা মুমিনের গর্ব তার রব আল্লাহ্, আর তাঁর ইজ্জত হলো তাঁর দ্বীন। কিন্তু মুনাফিকের গর্ব হলো তার বংশ এবং তার ইজ্জত হলো তাঁর সম্পদ।
অহংকারী হয়ে চলা আল্লাহ্’র পছন্দ নয়:
হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফের সৈন্যদলের সদস্য মাহলাব ইবনে মুগীরা হযরত মাতরাফ ইবনে আবদুল্লাহ্ (রাহঃ) এর পাশ দিয়ে উত্তম পোষাকে অহংকারের সাথে যাচ্ছিল, হযরত মাতারাফ (রহঃ) বললেন, হে আল্লাহ্’র বান্দাহ! এ ধরনের চাল-চলন আল্লাহ্ পাকের পছন্দ নয়। মাহলাব বলতে লাগল, আমাকে চেননা? আমি কে? হযরত মাতরাফ (রহঃ) বললেন, খুব ভাল চেনি! তুমি প্রথমে নাপাক বীর্য্য ছিলে এবং শেষে দুর্গন্ধময় মৃতদেহ হয়ে যাবে, আর এখন তুমি দৃর্গন্ধ যুক্ত ময়লা বহন করে চলেছ।
মাহলাব এ কথা শুনা মাত্র তার চলন ভঙ্গি পরিবর্তন করে দিল।
বিনয়ীর সাথে বিনয় এবং অহংকারীর সাথে অহংকার করাই যথার্থ চরিত্র
হযরত রাসূল (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এরশাদ করেছেনঃ বিনয়ীদের সাথে বিনয় এবং অহংকারীদের সাথে অহংকার কর। (কেননা) তোমাদের এ অহংকার অহংকারীদের জন্যে অপমান-অপদস্তের কারণ, আর তোমাদের জন্যে হবে সদকা।
বিনয়ের সর্বোচ্চ স্তর

হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) বলেন যে, বিনয়ের বর্বোচ্চ স্তর হলো: তুমি প্রত্যেক মুছলমান কে ছালাম করবে, মজলিশে যৎ সামান্য জায়গা পেয়েই সন্তুষ্ট থাকবে এবং নিজের জন্যে কৃত প্রশংসার প্রতি ঘৃণা করবে।
বিনয় নবী (আঃ) গণের নীতি, অহংকার কাফেরদের অভ্যাস:
হযরত ফকীহ আবুল লাইছ (রহঃ) বলেন যে, বিনয়ী হওয়া আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুচ্ছালাম ও নেককার গণের নীতি আর অহংকার করা কাফের ও ফেরাউনের মত লোকদের অভ্যাস।
পবিত্র কুরআনে কারীমে বিনয়ী ও অহংকারীদের আলোচনা এভাবে করা হয়েছে যে-
وَعِبَدُ الرَّحْمَنِ الَّذِيْنَ يَمْشُوْنَ عَلَى اْلاَرْضِ هَوْنًا
“রাহমান তথা আল্লাহ্’র প্রিয় বান্দাহ তারা, যারা জমীনে বিনয় ও গাম্ভীর্যতার সাথে চলে।”
وَاخْفِضْ جَنَا حَكَ لِلْمُؤْمِنِيْنَ اِنَّكَ لَعَلَى خُلُقٍ عَظِيْمٍ
হে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-! মু’মিনীনদের সাথে বিনয় সুলভ আচরণ করুন।
اِذَا قِيْلَ لَهُمْ لاَاِلَهَ اِلاَّ اللهُ يَسْتَكْبِرُوْنَ
যখন ওদেরকে (কাফের) বলা হয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই, তখন ওরা অহংকার করে।” (বুঝা গেল অহংকার কাফেরদের স্বভাব)।
اِنَّ الَّذِيْنَ يَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَا دَتِىْ سَيَدْ خُلُوْنَ جَهَنَّمَ دَاخِرِيْنَ
যারা অহংকারের বশে আমার এবাদত করে না, তারা নিশ্চিতই অপমানিত হয়ে অতি সহসাই জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
اُدْحُلْوا اَبْوَابَ جَهَنَّمَ خَلِدِيْنَ فِيْهَا فَبِئْسَ مَثْوَى الْمُتَكَبِّرِيْنَ
“জাহান্নামের দরজা সমূহ দিয়ে প্রবেশ করে যাও, তথায় চিরদিন থাকবে, অহংকারীদের ঠিকানা নিতান্তই নিকৃষ্ট ও কষ্টকর”।
اِنَّ اللهَ لاَيُحِبُّ الْمُتَكَبِّرِيْنَ
“নিশ্চিয়ই আল্লাহ্ তা’আলা অহংকার কারীদেরকে ভাল বাসেন না”।
বিনয় চরিত্রের শীর্ষতম বৈশিষ্ট। হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- অত্যান্ত বিনয়ী ছিলেন (তাইতো) তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- গাধায় সওয়ার হয়ে যেতেন, গোলামের দাওয়াত কবুল করে নিতেন।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) – এর বিনয়:
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) এর কাছে রাত্রে এক মেহমান আসল, তখন তিনি চেরাগের (প্রদীপ) সামনে বসে কিছু লিখতেছিলেন।

প্রদীপ যখন নিসপ্রভ হতে লাগল, মেহমান বলল, আমি প্রদীপটি ঠিক করে দেই? বললেন, মেহমান থেকে খেদমত নেয়া অসৎ চরিত্রের কাজ। মেহমান আরজ করল, গোলাম তো ঘুমুচ্ছে! তাকে উঠিয়ে দেবো?
বললেন, না, সে এখনি ঘুমিয়েছে। _এই বলে তিনি নিজেই উঠে গিয়ে প্রদীপে তেল ঢাললেন। মেহমান বলল, আমি থাকতে আপনি কষ্ট করলেন? এরশাদ করলেন, আমি তখনও ইবনে ওমর ছিলাম এবং এখনও ইবনে ওমর আছি। প্রদীপে তেল ঢালার কারনে আমার শানের (মর্যাদা) হানি হয়নি। আল্লাহ্ তা’আলা বিনয়ী ব্যক্তিদেরকে খুবই পছন্দ করেন।
হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) _এর বিনয়
হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) _এর একটি প্রশিদ্ধ ঘটনা আছে যে, তিনি শ্যামদেশের (সিরিয়া) রাষ্ট্রীয় সফর কালে সওয়ারী (বাহন) কে নিজের ও গোলামের মধ্যে এমন ভাবে ভাগ করে নিয়েছিনে যে, নিজের যখন আরোহন করবেন, তখন গোলাম উঠের লাগাম ধরে সামনে চলবে আর গোলাম যখন সওয়ার হবে, তখন তিনি নিজে লাগাম টেনে চলবেন। সেভাবেই রওয়ানা হলেন। পথিমধ্যে এক জায়গায় পানি পড়ল। হযরত ওমর (রাঃ) লাগাম ধরে জুতা বগলে নিয়ে পানিতে নেমে গেলেন, সিরিয়ার সন্নিকটে পৌঁছলেন, যেখানে তথাকার গভর্নর হযরত আবু উবায়দাহ (রাঃ) শহরের বাইরে এসে অপেক্ষা করতে ছিলেন।
ঘটনাচক্রে এবার তিনি লাগাম টানছিলেন আর গোলাম আরোহী ছিল।
হযরত আবু উবায়দাহ (রাঃ) বললেন, আমীরুল মোমেনীণ! এখন মানুষ আপনার অভ্যর্থনার জন্যে আসবে, সুতরাং এ দৃশ্যপট খুবই অসামঞ্জস্যশীল। আপনি সওয়ার হয়ে যান। তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা’আলা আমাদেরকে ইসলামের দ্বারা ইজ্জত দিয়েছেন। অতএব এখন মানুষের বলা-কওয়ার পরওয়া নেই। অর্থাৎ আমি শুধু মানুষের বলার কারনে বে-ইনসাফী করতে পারি না।
হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) মদীনা শরীফের গর্ভনর ছিলেন, একবার বাজারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় কোন এক ব্যক্তি তাকে কুলী মনে করে ডাক দিল এবং মাল-পত্র বহন করে নিয়ে যেতে বলল। তখন তিনি সন্তুষ্ট চিত্তেই তার সামান উঠিয়ে রওয়ানা দিলেন। পথে মানুষ এ দৃশ্য দেখে হয়রান ও অবাক হয়ে গেল এবং বলতে লাগল, হে আল্লাহ! আমীরুল মুমেনীনের উপর রহমত করুন। হে আমীরুল মুমেনীন! সামানগুলো আমাদেরকে দিন। কিন্তু তিনি প্রত্যেক থেকে অস্বীকার করে সামনে এগুতে লাগলেন, সেই ব্যক্তি নিজের ভুল বুঝে নিতান্তই লজ্জিত হয়ে ক্ষমা চাইতে লাগল এবং অজ্ঞতা প্রকাশ করে বলতে লাগল যে, হযরত! আমি আপনাকে চিনি নাই।

তিনি (রাঃ) বললেন, অসুবিধে নেই, চলতে থাক । সুতরাং তিনি তার মাল তার ঘরে পৌঁছে দিলেন। সে ব্যক্তি এত লজ্জিত হল যে, আগামী দিনের জন্যে ওয়াদা করে নিল যে, (জীবনে) কখনো আর কোন মজুর দিয়ে কাজ নেবে না।
হযরত আলী (রাঃ) _এর বিনয়:
হযরত আলী (রাঃ) বাজার থেকে দু’টি জামা খরীদ করে গোলাম কে বললেন, তোমার যেটি পছন্দ হয়, নিয়ে নাও। গোলাম উত্তমটি পছন্দ করল, সুতরাং সেটাই তাঁকে দিয়ে দিলেন। আর অপরটি নিজে পরিধান করে নিলেন, কিন্তু এটার আস্তীন (হাতা) বড় বা লম্বা ছিল, তাই কাঁচি এনে কেটে ছোট করে নিলেন এবং এটাই পরিধান করে খুৎবা দিতে চলে গেলেন।
লক্ষনীয়: এটাই ছিল আমাদের সেই সব পূর্ব পুরুষদের চরিত্র ও যাদের উপর ভিত্তি করেই আমাদের কাছে দ্বীন এসেছে । লৌকিকতা ও কৃত্রিমতা তাদের ধারে কাছেও ছিলনা কিন্তু আজ আমরা লৌকিকতা ছাড়া আর কিছুই বুঝিনা।
সদকা করলে মাল বাড়ে আর ক্ষমা করলে সম্মান বাড়ে:
হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এরশাদ করেছেনঃ সদকা দ্বারা মাল কমেনা (বরং বাড়ে) আর মানুষের অপরাধ ক্ষমা করার দ্বারা সম্মান বাড়ে।
তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু তা‌‌আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- ফরমায়েছেন: যে ব্যক্তি মৃত্যু কালে তিনটি বিষয় থেকে মুক্ত থাকবে, সে জান্নাতী হবে ১। অহংকার ২। খেয়ানত ৩। কর্জ্জ, তথা ঋণ।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply